শিশুর প্রথম খাবার প্রস্তুত করার সময় বিশেষ যত্ন নেওয়া উচিত, কারণ এটি তার জন্য সম্পূর্ণ নতুন অভিজ্ঞতা এবং তার পেটের জন্যও হালকা ও সহজপাচ্য খাবার হওয়া প্রয়োজন। প্রথম খাবার সাধারণত নরম, সহজে হজমযোগ্য এবং একটিই উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয় যাতে শিশুর অ্যালার্জির সম্ভাবনা কমে যায়। এখানে কিছু ধাপে শিশুর প্রথম খাবার প্রস্তুত করার পদ্ধতি আলোচনা করা হলো:
১. উপাদান নির্বাচন
- প্রথম খাবার হিসেবে একটিই খাবার দিন, যেমন চালের পেস্ট, মসুর ডালের পাতলা স্যুপ, সেদ্ধ করা আপেল বা আলু।
- সহজপাচ্য এবং অ্যালার্জি কম ঝুঁকিপূর্ণ খাবার (যেমন চাল, মিষ্টি কুমড়ো, গাজর) দিয়ে শুরু করতে পারেন।
২. খাবার সেদ্ধ করা
- খাবারটি ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে পানিতে সেদ্ধ করুন।
- পানি কমিয়ে ভালোভাবে নরম হয়ে আসা পর্যন্ত সেদ্ধ করুন যেন শিশুর জন্য সহজপাচ্য হয়।
৩. মসৃণ এবং নরম করে নেওয়া
- সেদ্ধ করা খাবার ঠান্ডা হলে তা ব্লেন্ডার বা ম্যানুয়াল চপারে মিহি করে নিন।
- অতিরিক্ত পানি বা বুকের দুধ যোগ করতে পারেন যাতে খাবারটি হালকা ও পাতলা থাকে।
৪. টেক্সচার ঠিক করা
- শিশুর প্রথম খাবার খুব মসৃণ এবং পাতলা হওয়া উচিত। যদি ঘন হয় তবে সামান্য পানি বা বুকের দুধ মিশিয়ে পাতলা করুন।
- ধীরে ধীরে টেক্সচারে পরিবর্তন আনুন এবং শিশু মানিয়ে নিলে পিউরি জাতীয় খাবার থেকে একটু ঘন খাবারে উন্নীত করুন।
৫. সংরক্ষণ ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা
- শিশুর খাবার সংরক্ষণে অত্যন্ত সচেতন থাকুন। একবার প্রস্তুত করা খাবার ১-২ ঘণ্টার মধ্যে খাওয়ানো উচিত।
- বাড়তি খাবার ফ্রিজে রাখার আগে ছোট ছোট অংশে ভাগ করুন এবং এক দিনের বেশি রাখবেন না।
- পরিষ্কার হাত এবং জীবাণুমুক্ত চামচ, বাটি ব্যবহার করুন।
৬. পরিমাণে সতর্কতা
- প্রথমে ১-২ চামচ দিয়ে শুরু করুন। শিশুর ইচ্ছা ও প্রতিক্রিয়া অনুযায়ী পরিমাণ বাড়ান।
প্রথম খাবার হিসেবে কী কী দিতে পারেন
- চালের পেস্ট: ছোট করে ভাত সেদ্ধ করে ব্লেন্ড করে নিন।
- ডালের স্যুপ: মসুর বা মুগ ডাল সেদ্ধ করে তা ছেঁকে নিয়ে পাতলা স্যুপ বানান।
- সেদ্ধ আপেল বা কলা পেস্ট: আপেল সেদ্ধ করে মিহি পেস্ট তৈরি করুন বা কলা মেখে দিন।
প্রথম খাবারগুলো সহজ ও নরম হওয়া উচিত, যাতে শিশুর হজমে সহায়ক হয়। শিশুর প্রতিক্রিয়া দেখুন এবং তার পছন্দ অনুযায়ী ধীরে ধীরে অন্যান্য নতুন খাবার যোগ করুন।